1 May 2021 .Doctor , Kolkata

একজন পুলিশকর্মী, যিনি ১৫ বছর ধরে ব্লাডার ক্যান্সারে ভুগছিলেন।



আশার কাহিনি

আজ একজন পুলিশকর্মীর কথা বলব যিনি ১৫ বছর ধরে ব্লাডার ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

মিঃ কার্ত্তিক চন্দ্র ঘোষ, যিনি খুব কম বয়স থেকে ইউরিন ব্লাডার ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

২০০৩ সালে ওনার ইউরিন ব্লাডার ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্যে ভেলোর যান। যেখানে তিনি ২০০৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চিকিৎসায় ছিলেন। এরপর ২০০৯ সাল থেলে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি আর কোন চেক-আপ বা ফলো-আপ করাননি এবং কোন ডাক্তারকেও আর দেখাননি।

কিন্তু, ২০১৮ সালে তিনি লক্ষ্য করেন তার ইউরিন থেকে রক্ত বের হতে । তিনি সেদিনই নারায়াণা সুপারস্পেশালিটি হসপিটাল, হাওড়ার ডাঃ অভয় কুমারের সাথে পরামর্শ করেন। এরপর পরীক্ষা করে দেখা যায় তার ব্লাডার ক্যান্সার আবার ফিরে এসেছে। এটি তাঁর জন্য একটি হৃদয় বিদারক সংবাদ এবং পুরো পরিবারের জন্য একটি বেদনাদায়ক বিস্ময়কর ঘটনা ছিল।

ডাঃ অভয় ওনাকে ভরসা দিয়েছিলেন এবং আশা দিয়েছিলেন এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার। এরপরই তিনি ভর্তি হন ডাঃ অভয় কুমারের অধীনে অপারেশনের জন্যে। ১৬ই জানুয়ারী, ২০১৮ সালে তার অপারেশন করা হয়, যার নাম হল সিস্টোস্কোপি এবং টি.ইউ.আর.বি.টি. (Cystoscopy and TURBT)। এই অপারেশনের মধ্যে দিয়ে টিউমার সম্পূর্ণভাবে বের করা হয় এবং বায়োপসি রিপোর্টে অতিমাত্রায় উচ্চ গ্রেডের ব্লাডার ক্যান্সার পাওয়া যায়। পরে তাকে ইন্ট্রাভেসিক্যাল বিসিজি-র (বিসিজি যেটা তার ইউরিনারি ব্লাডারের মধ্যে স্থাপন করা হয়) মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। তিনি প্রতিনিয়ত সিস্টোস্কোপির মাধ্যমে চেক-আপে আছেন এবং গত ৪ বছর ধরে আবার নিরাময় পেয়েছেন।

আজ তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতন তিনিও সাধারণ জীবনযাপন করছেন।

এই কাহিনি থেকে সবার জন্য যা বার্তাগুলি রইল, সেগুলো হলঃ

  • যদি আপনি স্মোকিং (ধূমপান) বা তামাকজাত দ্রব্য না খান তাও ব্লাডার ক্যান্সার খুব অল্প বয়সেও হতে পারে
  • চেক-আপ ঠিকমতো না করালে ব্লাডার ক্যান্সার আবারও ফিরে আসতে পারে। এজন্য চেক-আপ বা ফলো-আপ এ থাকা খুবই জরুরি।
  • আপনার ইউরিন বা প্রস্রাব থেকে রক্ত পড়তে দেখলে তা কখনই উপেক্ষা করবেন না বা এড়িয়ে যাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন, সে একবিন্দুই রক্ত পড়ুক না কেন।
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ব্লাডার ক্যান্সার ধরা পড়লে কিছু ছোট সার্জারি বা মেডিসিনের মাধ্যমে সহজেই নিয়ন্ত্রন করা যায় বা সারিয়ে তোলা যায় ।
  • ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের নিয়মিত চেক-আপ-এ থাকতে হবে তা সে সিস্টোস্কোপি,প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে বা সোনোগ্রাফির মাধ্যমে।

সবশেষে বলব যে আশাহত হয়ে পড়বেন না বা আতঙ্কিত হবেন না। আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং নিজের উপর ভরসা রাখুন।